কৃত্রিম উপায়ে কিভাবে বৃষ্টি নামানো যায়। বিস্তারিত দেখে নিন-

এটি কিন্তু দারুণ একটি ব্যাপার যে আজ আমরা চাইলে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারি। তবে এই কৃত্রিম বৃষ্টিপাত নিয়ে জানার আগে আসল বৃষ্টিপাতের দিকে একটু চোখ বুলিয়ে আসা যাক!

বৃষ্টি কিভাবে হয়?

ট্রপোস্ফিয়ারে থাকা মেঘগুলো যত উপরে উঠতে থাকে, তাদের তাপমাত্রাও তত কমতে থাকে, কারণ ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমতে থাকে।
চক্র
চক্র



যখন মেঘগুলোর তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের চেয়ে বেশী থাকে, তখন এদেরকে বলা হয় উষ্ণ মেঘ এবং যখন এদের তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের চেয়ে কম থাকে তখন এদের বলা হয় শীতল মেঘ।

উষ্ণ মেঘের ক্ষেত্রে ছোট ছোট জলের বিন্দুগুলো একে অপরের সাথে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে আকৃতিতে কিছুটা বড় হতে থাকে এবং এই বড় আকৃতির জন্য এরা মেঘের প্লবতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাটিতে এসে পড়ে যেটাকে আমরা আসলে বৃষ্টি বলে জানি।

শীতল মেঘের ক্ষেত্রেও কিছুটা একই ঘটনা ঘটে। সেখানে ছোট ছোট বরফের ক্রিস্টালগুলো বড় হতে হতে প্লবতাকে আবারও বূড়ো আঙুল দেখিয়ে মাটিতে পড়তে থাকে। যখনই এই ছোট ছোট আইস ক্রিস্টালগুলোর তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের চেয়ে বেশী হয়, তখন সেগুলো গলে গিয়ে জলের ফোঁটা হিসেবে পড়তে থাকে।

আগ্রহী পাঠকগণ নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন, যদি কোনোভাবে ছোট ছোট জলের বিন্দু কিংবা আইস ক্রিস্টালগুলোকে কৃত্রিমভাবে ভারী করে দেয়া যায়, তাহলেই কেল্লা ফতে! কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটাতে তখন আর কোনো বাধাই থাকবে না!

প্রশ্ন হচ্ছে , এটা কীভাবে করা হবে আর কী দিয়েই বা করা হবে? এর জন্য বেশ কিছু উপায় আছে। যেমন, বিমানের মাধ্যমে মেঘে হাইগ্রোস্কোপিক পাউডার বা জল স্প্রে করা। কিন্ত সবচেয়ে সাধারণ উপায়টি হচ্ছে ড্রাই আইস (কঠিন কার্বন ডাইঅক্সাইড) বা সিলভার আয়োডাইড ব্যবহার করা।

এভাবে রাসায়নিক ছিটিয়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানোর পদ্ধতিকে বলা হয় ক্লাউড সিডিং।

ক্লাউড সিডিং সাধারণত তিন রকমের হয়ে থাকে।

স্ট্যাটিক ক্লাউড সিডিংঃ এখানে সিলভার আয়োডাইড মেঘে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে মেঘে থাকা জলের অণুগুলোকে ঘনীভূত করা হয় যার ফলে বৃষ্টিপাত হয়।
ডায়নামিক ক্লাউড সিডিংঃ এ পদ্ধতিতে বাতাসের বেগ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মেঘের মধ্য দিয়ে সাধারণের চাইতে বেশী পরিমাণ পানির অণুর প্রবাহ ঘটানো হয়। বেশ কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে আগাতে হয় বলে এই পদ্ধতিটি স্ট্যাটিক ক্লাউড সিডিং এর চেয়ে বেশ জটিল।
হাইগ্রোস্কোপিক ক্লাউড সিডিংঃ এ পদ্ধতিতে মেঘের নিচের অংশে সোডিয়াম ক্লোরাইড ছিটিয়ে দেয়া হয়। জলের অণুগুলো সোডিয়াম ক্লোরাইডের সাথে মিশে গেলে আস্তে আস্তে বড় এবং ভারী হতে থাকে, ফলে বৃষ্টিপাত হয়।
ক্লাউড সিডিং করা হচ্ছে।
ক্লাউড সিডিং করা হচ্ছে। 


এসব উপায়েই কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানো হয়।

চীনের কৃত্রিম চাঁদ বানানোর কাহিনি জানতে এখানে ক্লিক করুন।   

Comments

Post a Comment

আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করুন

Popular posts from this blog

৩০ টি জনপ্রিয় লেখকের উপন্যাস || যাদের উপন্যাস পড়লে আপনাকে মুগ্ধ করবে।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পরিবার কেন পাকিস্তানে থাকে?